![]() |
প্রবাসি মুজিবের প্রতিনিধি থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ করছে মঈনুলের বাবা নেছারুল হক, মা বেগম আঙ্গুর জাহান। |
শিব্বির আহমদ রানা: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম চাম্বল মুন্সীখীল মৌলভী বাড়ীর ৩নং ওয়ার্ডের মো. নেছারুল হকের ছেলে মো. মঈনুল হক এর দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ মুঈনুল পড়ে থাকে বিছানায়। সেনাবাহিনী থেকে অবসর প্রাপ্ত দরিদ্র বাবা তার চিকিৎসার জন্য সব শেষ করে দিয়েছে। মঈনুলের বড় ভাই মঞ্জুর জানান, 'মঈনুলের চিকিৎসার বিষয়ে ভারতের রবীন্দ্র মেডিকেল এর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা হয়েছে, তারা বলেন একটা কিডনি অপসারণ করতে অন্তত ৯লক্ষ টাকা লাগতে পারে।' যেখানে দুটো কিডনিই নষ্ট সেখানে তার বাবার পক্ষে চিকিৎসার খরচ যোগাড় করা দূরহ হয়ে পড়ছে।
মঈনুল প্রতিভাবন একজন খেলোয়াড়। বাঁশখালীর অনেকের কাছে প্রিয়ভাজন ছেলে সে। ক্রিকেট, ফুটবল ব্যাডমিন্টন দৌড় থেকে শুরু করে কাবাডি সব খেলায় মাতিয়ে তুলত মাঠ। ছেলেটা উপজেলা ছাড়িয়ে চট্টগ্রামের আবাহনীর জুনিয়র টীমে সুযোগ পেয়ে যায়।সেখানেও মন জয় করে ফেরে চ্যাম্পিয়ন। তার আরেক ভাই মঞ্জুও সমানে সমান খেলে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেছে, মঈনুলের দুটো কিডনিরই কন্ডিশন খুবই খারাপ! রিপ্লেস প্রয়োজন অতি সত্ত্বর। কিন্তু পরিবার অসহায় এখানে। মঈনুলের এ খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেইসবুক, ইন্টারনেটে। অনেকে মঈনুলের পাশে দাড়ানোর জন্য, মঈনুলকে বাঁচানোর জন্য নানাভাবে প্রচার চালায় এবং সকলের কাছে সহযোগীতা কামনা করেন।
![]() |
কিডনি রোগে আক্রান্ত মো. মঈনুল হক |
অসুস্থ মঈনুল ভাইয়ের কাঁধে মাথা রেখে আফসোস করে, ভাই আমার এক মিনিট ও শান্তি লাগছে না। অথচ ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ভারতে উন্নত চিকিৎসা দিলে ভালো হবার সুযোগ আছেই। তার বন্ধুরা মঈনুলকে অকালে তাদের চোখের সামনে হারাতে চায়না। তাই তারা সকলের কাছে সহযোগীতার জন্য নেমে পড়ে। ইতোমধ্যে মইনুলের বন্ধুরা চিকিৎসার টাকা জোগাড় শুরু করে দিয়েছে। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেন না? এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মঈনুলের বিষয়টি জানতে পারেন ওই উপজেলার পূর্ব শীলকূপ মাতব্বর পাড়ার মো. নওসা মিয়ার ছেলে প্রবাসি মো. মুজিবুর রহমান। তিনি বর্তমানে পূর্ব আফ্রিকার মুজাম্বিক মিলানজি সিটিতে থাকে। প্রবাসি মুজিবুর রহমান নিজের উদ্দ্যোগে আফ্রিকার বাঙালি প্রবাসিদের কাছ থেকে ২লক্ষ ১৪হাজার টাকা সংগ্রহ করে মঈনুলের পরিবারের কাছে পৌছে দেন। মুজিবের সাথে আফ্রিকায় সবসময় পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেন তারা হলেন- সওকত, বেলাল, রফিকুল, মিজান, আমির, সেলিমসহ অনেকে।
প্রবাসি মুজিবের ছোট ভাই বাঁশখালী ব্লাড ব্যাংকের সহযোগী এডমিন মো. ফারুখ খান জিসান রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মঈনুলের পরিবারকে নগদ দুই লক্ষ চৌদ্দ হাজার টাকা দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজল কাদের, ব্লাড ব্যাংকের উপদেষ্ঠা ডা. নারায়ন দাশ, প্রতিষ্ঠাতা এডমিন সজীব নমঃ শুভ, এডমিন স্বরূপ দেবনাথ, মো. জোজ মোহাম্মদ, সৌরভ সেন ঝুন্টু প্রমূখ।
![]() |
প্রবাসি মুজিবুর রহমান |
মঈনুলের বাবা মেছারুল হক বলেন, এখনো পর্যন্ত হাতে ৩লক্ষাধিক টাকার সহযোগীতা পেয়েছি। তার দুটো কিডনিই নষ্ট। সব মিলিয়ে অনেক টাকা দরকার। মঈনুলকে বাঁচাতে আমি আত্মীয় স্বজনের কাছে সহযোগীতা চেয়েছি। সবার সহযোগীতা পেলে আমার মঈনুল আবার সুস্থ হয়ে উঠবে। প্রবাসি মুজিবুর রহমান ও তার সহযোগীরা যে সহযোগীতা করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন