![]() |
পুইঁছড়ি সরলিয়া বাজার এলাকায় জলকদর খাল দখল করে উভয় পাশে নিত্যনতুন স্থাপনা নির্মাণ করেছে ভূমি দস্যুরা
|
জোবাইর চৌধুরী, বিশেষ প্রতিবেদক: নদী দখল, ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য এসব নিত্যকার ঘটনা করে বসে প্রভাবশালী একটি মহল। এদের দৌরাত্ম্যে নদী হারাচ্ছে তাদের নাব্যতা, বিলীন হচ্ছে প্রকৃত দৃশ্যপট। তাছাড়া 'নদীর এপাড় ভাঙ্গে ওপাড় গড়ে' খেলায় দিন হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের লোকালয়। বিলীন হচ্ছে জনমবসতঘর। এ জন্যে সরকারের উদ্বেগ, উৎকন্ঠার শেষ নেই। কিন্তু নদী খেকোর দৌরাত্ম্য রুখতে কেন নেই প্রশাসনের নজরদারী। দিনের পর দিন অবৈধ দখলের দরূণ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরের মোহনা জলকদর খাল। দিন দিন অবৈধ দখলের মাত্রা বেড়েই চলেছে। থামছে না নদী খেকোদের দৌরাত্ম্য। জলকদর খাল শুরু হয়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তর রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে বয়ে যাওয়া জলকদর খাল চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৯টি উপকূলীয় ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত। সেই জলকদর খালের উপর দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুরা। একের পর এক নদী দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে আটকা রয়েছেন।
এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জলকদর খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব কার? এদিকে অবৈধ দখলদারদের কারণে ভারী বর্ষনের পানি নদীতে প্রবাহিত হতে না পারায় লোকালয় নিমজ্জিত হচ্ছে পানির তলে। সামান্য বৃষ্টিতে লোকালয় সাগরের রুপ নেয়। এই নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে দখলদারদের চলছে উত্তেজনা। তাছাড়া প্রতিবাদকারীদের ফাঁসাতে চাঁদাবাজি মামলাও দায়ের করছে প্রভাবশালী মহল এমনটি জানায় স্থানীয়রা।
![]() |
পুইঁছড়ি সরলিয়া বাজার এলাকায় জলকদর খাল ভূমি দস্যুদের কবলে
|
এই যখন উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের অবস্থা তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে।বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের সরলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দখল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী শিহাব উল আজিম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে মামলায় ফাঁসানোরও হুমকি দেন বলে জানান এলাকাবাসীরা।
তাছাড়া নদী দখলে রয়েছে প্রভাবশালী মহলের একাধিক সিন্ডিকেট। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খ.ম. জুলফিকার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি অনেক আগে থেকেই অবহিত হয়েছি আমরা। তবে এই বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুঁইছড়ি ও ছনুয়া ইউপি’র উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের ৬৪/২এ এর জলকদর খালের উভয় পার্শ্বে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর পূর্বেও অধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় নদীর সম্পূর্ণ নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচল। তাছাড়া ৯টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জলকদর খালের উভয় পার্শ্বে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠার ফলে নদীর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে সরু হয়ে পড়েছে। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি সাগরে পতিত হতে না পারায় বন্যার আশংকাও দেখা দিয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অচিরেই জলকদর খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা না হলে এলাকাবাসী বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হবে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আশু কামনা করেছেন।
[বাঁশখালী জনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন