বাঁশখালী জনপদ সত্যপ্রকাশে আপোষহীন

বিজ্ঞাপন দিয়ে সাথে থাকুন

test

ইয়াবা-অস্ত্রের সম্র্যাজ্য বাঁশখালীর উপকূলঃ নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী মহল

চাম্বল ও সরল ইউপিতে ডাকাতদলের প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার
জোবাইর চৌধুরী, এক্সক্লুসিভ রিপোর্টারঃ একদিকে পাহাড় অন্যদিকে সাগর। পাহাড়-সাগর মিতালী, পূর্বে সবুজের বিচরণ ক্ষেত্র। অপূর্ব সৌন্দর্য্যের জনপদ বাঁশখালী। চট্টগ্রামের এই উপজেলার ৩৩কিলোমিটার প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে পাহাড়ের পাদদেশ, পশ্চিমদিকে সাগর উপকূলীয় এলাকা। সাগর ও পাহাড় মিলে বাঁশখালী উপজেলায় নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্যে বিরাজমান। তবে এই প্রকৃতির উপজেলাকে বিনষ্টে নেমেছে কতিপয় সরকার দলীয় নেতা ও প্রভাবশালী মহল।তাদেত ক্ষুদ্র সিন্ডিকের সদস্যদের মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট ও দেশীয় অস্ত্রপাচারের একাধিক সিন্ডিকেট রয়েছে।

ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারাদেশে পাচার হচ্ছে এই মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট। তাছাড়া স্কুল, কলেজ পড়ুয়াছাত্ররাও ইয়াবা আসক্তি হয়ে জড়িয়ে পড়ছে তাদের ব্যবসার সিন্ডিকেটের সাথে। নেশায় আসক্ত হয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারে নেমেছে স্কুল পড়ুয়া ছাত্ররা পর্যন্ত। 

এদিকে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় সাগর পথে নৌযানে হারহামেশায় ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে এই এলাকায়। উপকূলীয় এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান ঢুকার পর সেখান থেকে বিভিন্ন ক্ষুদ্রব্যবসায়ীর মাধ্যমে পাচার হচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে। সবমিলিয়ে বাঁশখালীর উপকূলীয়এলাকাকে ইয়াবা ও অস্ত্রের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে একাধিকপাচারকারী সিন্ডিকেট। এই যখন উপজেলার অবস্থা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ছোট খাট অভিযানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারীকে আটক করলেও বৃহৎসিন্ডিকেটের হোতারা রয়েছে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। 

সম্প্রতি র‍্যাব-৭ এর অভিযানে ডাকাত, জলদস্যুর সাথে বন্দুক যুদ্ধে একাধিক ডাকাত নিহত হওয়ায় বিভিন্ন ডাকাত বাহিনীর সদস্যরা চাম্বল ছড়ারকুল এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে ৪০-৫০ জনের অবৈধ অস্ত্রধারী ডাকাতদল ৩ মাস যাবত অবস্থান করায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এদিকে এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষের একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৮ জুলাই ) উপজেলার প্রত্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় এলাকা খানখানাবাদ, ছনুয়া, গন্ডামারা, শেখেরখীল ও সরল ইউনিয়নে রয়েছে বিশাল ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্র পাচারকারী সিন্ডিকেট। এদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সরকার দলীয়কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। 

মায়ানমার হতে সমুদ্রপথে কোন নৌযানের মাধ্যেমে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই উপকূলীয় এলাকায় অনায়াসে প্রবেশ করছে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেট ও মেইড ইন মহেশখালীর অস্ত্র। উপকূল হতে মূল সিন্ডিকেটের হাতে ইয়াবা ট্যাবলেট ও অবৈধ অস্ত্র পৌঁছানোর পর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিকট সহজেই পৌঁছে দিচ্ছেন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা। তাছাড়া ছাত্রদের টাকার লোভ দেখিয়ে এলাকার বাইরে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করছে বিভিন্ন সিন্ডিকেট। কেননা ছাত্র হিসেবে গ্রামে তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তেমন তল্লাশী করে না। 
পুইছডির ইয়াবা আস্তানা হতে এক ব্যক্তির ইয়াবা সেবনের দৃশ্য

এদিকে সাগর উপকূলীয় এলাকা ছনুয়া ইউপির ১নং ওয়াডের্র ইউপি সদস্য মোঃ আবচার ও একই ওয়ার্ডের মোহাব্বত আলী সিকদার পাড়ার মৃত সৈয়দ আহমদের পুত্র মোঃ ইউনুছ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করে থাকেন। এই সিন্ডিকেটে রয়েছে চি‎হ্নিত দাগী জলদস্যু, ডাকাত, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও। তাছাড়া সরল ইউপি’র বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, জলকদর খালের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে গড়ে উঠেছে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের বিশাল সিন্ডিকেট। সাগরপথ দিয়ে আসা ইয়াবা ট্যাবলেট অনায়াসে ঢুকে নদী পথ দিয়ে সরলের বিভিন্ন লোকালয়ে প্রবেশ করে এলাকায় ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে । একই ধরনের খানখানাবাদ, গন্ডামারা ইউপিতেও গড়ে উঠেছে ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্র পাচারের বিভিন্ন সিন্ডিকেট। সবমিলিয়ে এলাকার সুশীল সমাজ ও মানুষের বর্ণনা মতে বাঁশখালীর উপকূল হয়ে উঠেছে ইয়াবা ও অস্ত্র পাচারের স্বর্গরাজ্য। 

মরণ নেশা ইয়াবা পাচার ও সন্তানদের নেশার আসক্তি হতে বাঁচাতে বাঁশখালীর উপকূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত অভিযানের আহবান জানিয়েছেন ওই এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।   

এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানা পুলিশের ওসি মো. রেজাউল করিম মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এই থানায় সদ্য যোগদান করেছি তাই পুরো এলাকায় কোথাই কি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তা জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে । উপকূলীয় এলাকায় মাদক ও ইয়াবা পাচার রোধে পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক মানব, ইয়াবা, ও অস্ত্র পাচারকারীসহ ডাকাত আটক করা হয়েছে বলেও তিনি দাবী করেন। মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্রপাচারে উপকূলের একাধিক সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও তিনি জানান।


বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com
                                                                                                                  

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.