advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

শিক্ষার অভাব: প্রেক্ষিত সমাজ

কজন মানুষ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে। সমাজে বসবাস করে। কারণ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। প্রথমে পরিবার। পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে গোষ্ঠী, গোষ্ঠী থেকে জাতি, জাতি থেকে রাষ্ট্র। রাষ্ট্র বা সমাজে বহু ধরনের মানুষ বসবাস করে। তাদের মধ্যে শিক্ষার ভিত্তিতে ভাগ করলে প্রধানত শিক্ষিত ও অশিক্ষিত দুই প্রকারে বিভক্ত করা যায়। শিক্ষিতরাই সমাজপতি। তারা সচেতন। আবার অনেকে শিক্ষিত হলেও শিক্ষার শিক্ষা তাদের নাই!

আমাদের জীবন প্রবাহে পরিবেশ প্রধানতম ভূমিকা রাখে। বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ ও পানি দূষণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষিত হয়। শিক্ষিতরা এসবের বিরুদ্ধে কাজ করেন। কিন্তু সহজে তারা এসব নিয়ে কাজ করতে পারেন না। প্রধানতম বাধা অশিক্ষিত, অসচেতন, ধর্মীয় গোড়ামি, সংকীর্ণমনা কিছু ব্যক্তি। তারা না বুঝে, না জেনে, সৃজনশীল চিন্তা না করে ভালো কাজের বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়! ব্যস্ত থাকে ত্রুটি নিয়ে, মানুষের সমালোচনায়, সর্বোপরি কিছু অপ্রত্যাশিত বিষয় নিয়ে। কথায় কথায় ধর্ম ব্যবহার করতে চায়। মানুষকে বেদআতি, ওহাবি-সুন্নি, ভণ্ড, মাজার পূজারী, ইসলাম বিরোধী, জামায়েত-শিবির, বিএনপি-আওয়ামী লীগ নামে আখ্যায়িত করে। টিভিতে খবর দেখার চেয়ে উপস্থাপিকার মাথার কাপড় ও উচ্চারণে ভুল (ভুল থাকবে স্বাভাবিক, তবে নাও থাকতে পারে) তথা দোষ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।

সবচেয়ে অবাক হই যখন একজন মুসলিম অন্য একজন মুসলিমকে কাফের, নাস্তিক বলে। হাদিসে একজন ভিন্নধর্মীকেও কাফের বলতে নিষেধ করেছেন। কারণ তিনি একদিন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে পারেন। বাস্তবিক শিক্ষার প্রভাব সংকটময়। মানবিকতার খুবই অভাব। মা-বাবা সন্তানকে, সন্তান পিতা-মাতাকে, ভাই বোনকে, বোন ভাইকে, সর্বোপরি একজন মানুষ অন্য মানুষের উপর হামলা বা হত্যা করতে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, সহকর্মী, ভাই-বোন, পিতা-মাথা, প্রেমিক-প্রেমিকা কিছুই চিন্তা করে না। আদর্শ, মত, স্বার্থ হাসিলে সমস্যা হলেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া, গুম, খুন, হত্যা, হামলা-মামলা।

কেন এমন হয়? মানুষ হয়ে মানুষ হত্যা, আসলে তাদের কি বিবেক নাই? তাহলে দোষ কার? দোষ কি পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের, নাকি তাদের? শাসক দলের ভাষায়, মিডিয়ার প্রচারণায়- বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। অর্থনীতির চাকা দিনদিন নতুন রূপে ঘুরছে। তাহলে গুম, খুন, মারামারি-হানাহানি, শিশু নির্যাতন, মুক্তমনাদের হুমকি, নারী নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, ধর্ষণ, বাকরোধের ব্যর্থ চেষ্টা কেন?

সত্যিই সবকিছু চলছে দুর্বার গতিতে। শিশু মৃতের হার কমছে, শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। শুধু আমরা মানুষরা ঘুরছি না। আমাদের মননের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে না। আমরা এখনও সেই আমলে পড়ে আছি! অর্থনীতির সাথে আমাদের মননের পরিবর্তন সমান তালে এগুলে দেশ আরও এগিয়ে যেত। কিন্তু আমরা এখনও মুরগি নিয়ে টানাটানি করি, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করি, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করি, একজন আরেকজনের সমালোচনায় সময় পার করি, ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কারকে ধর্মের চেয়েও শ্রদ্ধা জানাতে সময় ব্যয় করি, স্বাধীন চেতনায় বিশ্বাসী নই, নিজের মতামতকেই প্রধান্য দিই, নিজের মতামত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি, অন্যকে বা অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা জানাতে জানি না, নিজে তো ভালো কাজ করি না; অন্য কেউ করলে সেখানে বাধা দিয়ে থাকি!

এসবের অন্যতম কারণ বাস্তব শিক্ষার অভাব। একটি জাতি যত বেশি শিক্ষিত, সে জাতি ততবেশি উন্নত। কাজেই শিক্ষা মানুষের অপরিহার্য বিষয়। এখন কথা হচ্ছে, শিক্ষাটা কোন শিক্ষা? শিক্ষা হতে হবে আধুনিক, যুগোপযোগী, সময়োপযোগী। যেখানে ধর্ম যেমন থাকবে তেমন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, নীতি-নৈতিকতা, আইন, মানবিক শিক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ সবকিছু থাকবে। সবকিছুর সংমিশ্রনে একটি গ্রহণযোগ্য শিক্ষাব্যবস্থাই হবে সমাজের জন্য আশীর্বাদ। সমাজের বা মানুষের প্রত্যহ পথচলার সাথে সামঞ্জস্যময় হতে হবে। সমস্যার গোড়ার সমাধান উল্লেখ হতে হবে।

যার ব্যক্তি নামক কোনো অভিভাবক নাই, তার বিবেক নামক অভিভাবক রয়েছে। বিবেক বড় সম্পদ। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে পুরো পৃথিবীতে ভালো এবং খারাপ দুইয়ের মাঝে বিচরণের ক্ষমতা দিয়েছেন বিবেক দিয়ে। আইন, শাস্তি যেখানে ব্যর্থ নীতি-নৈতিকতা, বিবেক সেখানে শিক্ষক। বিবেককে কাজে লাগাতে হবে। প্রত্যেক জিনিসের দুটি দিক আছে। একটি পজেটিভ, আরেকটি নেগেটিভ। তবে পজেটিভ সবসময় জিতে যায়। যেমন আপনি পজেটিভ নিলে জিনিসটা যেমন জানতে পারবেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতাও পাবেন।

লিখেছেন-
রাকিবুল হক সায়েম
শিক্ষার্থী: রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ



বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।
                  আপনার মেইল পাঠাতে:
                 banshkhalijanaphad24@gmail.com


কোন মন্তব্য নেই