বাঁশখালী জনপদ সত্যপ্রকাশে আপোষহীন

বিজ্ঞাপন দিয়ে সাথে থাকুন

test

শীলকূপ-গন্ডামারা সড়কের খানাখন্দে হাঁটুজল ভোগান্তিতে কয়েক হাজার মানুষ

 "কাজ শেষ না করেই পালিয়েছে ঠিকাদার"

শীলকূপ টাইমবাজার-গন্ডামারা সড়কে হাঁটুজল পানি, চরম ভোগান্তিতে কয়েক হাজার লোকজন।

শিব্বির আহমদ রানাঃ শীলকূপ ও গন্ডামারা ইউনিয়নের বৃহত্তম জনগোষ্ঠির সাথে বাঁশখালী প্রধান সড়কের যোগাযোগের অন্যতম 'শীলকূপ টাইমবাজার-গন্ডামারা সংযোগ সড়ক'। এ সড়কটির কাজ কয়েকধাপে শুরু হলেও কাজ শেষ না করে বারবার অদৃশ্যকারণে কাজ ছেড়ে পালিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারীতে সড়কের কাজ শুরু করেন। কার্যাদেশ পাওয়া এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডার হওয়ার এক বছর পর সড়কের কাজ শুরু করলেও কাজের তৃতীয় ধাপে এসে সড়কের একতৃতীয়াংশ কাজই শেষ না করে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়ত করা পথচারীরা অভিযোগ করে বলেন, 'টাইমবাজার থেকে গন্ডামারা ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে বর্ধিত অংশের মাটি কেটে স্যান্ড ফিলিং করে মাঝপথে কাজ বন্ধ করে চলে যান সংশ্লীষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি বৃষ্টিবর্ষণ হলে খানাখন্দের সৃষ্ট সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়ন ও গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম গন্ডামারার সাথে বাঁশখালী প্রধান সড়কের একমাত্র সংযোগ সড়ক এটি। সামান্য বৃষ্টি হলেও দীর্ঘ সড়কজুড়ে খানাখন্দ তলিয়ে যায় পানিতে। এতে স্বাভাবিকভাবে হাটাঁ-চলাফেরা করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোকজন কে।

সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শীলকূপ টাইমবাজার ও পশ্চিমে গন্ডামারা ইউনিয়নের বৃহত্তম জনগোষ্ঠির সঙ্গে বাঁশখালী প্রধান সড়কে যাতায়াতের সুবিধার্থে টাইমবাজার থেকে গন্ডামারা ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক বর্ধিতকরণসহ পানি নিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দু'পাশ বর্ধিতকরণে সড়কটির পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর এর জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় পৌনে ৪ কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স রয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারীতে সড়কের কাজ শুরু করেন। দু’পাশে বর্ধিত অংশের মাটি কেটে স্যান্ড ফিলিং করেন। মাঝপথে কাজ বন্ধ করে চলে যান। আবার আসেন। তৃতীয়ধাপে আবার কাজ শুরু করেন। কাজের একতৃতীয়াংশ শেষ না করে অদৃশ্য কারণে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি ভারী বর্ষণে সড়কের খানাখন্দগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। এতে সড়ক দিয়ে চলাচল করা বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বিশেষ করে এ সড়ক দিয়ে সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর বড় মাদরাসাসহ বেশ কয়েটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগে যাতায়ত করে। বৃষ্টির মৌসুমে অধিকাংশ শিক্ষার্থী সড়কের নাজেহাল অবস্থার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে।

গন্ডামারা আনোয়ারা বেগম স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক ওবাইদুল হক বলেন, 'শীলকূপ থেকে গন্ডামারায় এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই আমি যাতায়ত করি। শীলকূপ টাইম বাজার থেকে গন্ডামার ব্রীজ পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। এ সড়ক দিয়ে দুই ইউনিয়নের হজার হজার পথচারী ও বাঁশখালী সরকারি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় সহ আরও ৩০ টিরও অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়া এটি গন্ডামারা এস আলম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দীর্ঘ কয়েক বছরেও সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় জনমনে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য মাননীয় এমপি মুজিবুর রহমান সিআইপি মহোদয়ের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি।'

এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাকায়তকারী সিএনজি চালক জাহেদুল ইসলাম বলেন, 'সাধারণ লোকজনের হাঁটা চলার অযোগ্য সড়কটি। তার ওপর বড় বড় গর্ত। গর্ত জুড়ে হাঁটু পরিমাণ পানি। এসবের মধ্যে দিয়ে আমরা যানবাহন নিয়ে অতিকষ্টে যাতায়ত করি। এতে গাড়ীর নানা যন্ত্রাংশের ক্ষতি হচ্ছে। পড়তে হচ্ছে দুর্ঘটনায়ও।এভাবে আর কতো সময় দুর্ভোগ পোহাতে হবে আমাদের জানা নেই। দ্রুতই সড়কটির কাজ শেষ করার জন্য তিনি সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।'

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এল জি ই ডি) কর্মকর্তা কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'দু'একদিনের মধ্যে সড়কটির রি-টেন্ডার হয়ে যাবে। স্টিমিটও এপ্রোভ হয়ে যাচ্ছে। সড়কটির কাজ সংস্কারের জন্য কন্ট্রাক্টর সিলেক্ট হয়ে কাজ শুরু হতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগবে। বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলেই সড়কটির কাজ শুরু হবে। কাজ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আগের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।'






বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:

banshkhalijanaphad24@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.