advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

দেশের প্রসিদ্ধ বাঁশখালীর কালীপুরের রসালো লিচু আসছে বাজারে -বাঁশখালীজনপদ২৪.কম


শিব্বির আহমদ রানাঃ লিচুর জন্য বিখ্যাত বাঁশখালীর কালীপুর। মধুমাস জৈষ্ঠ্যের রসালো ফল লিচু। কালীপুরের আগাম লিচু বাজারে আসছে। পাকনা লিচু বাগান ছাড়াও সোভা পাচ্ছে বাড়ীর ছাদ বাগানেও। কালীপুরের পূর্ব পাহাড়ী এলাকায় খুব কম বসতঘরই আছে যাদের তিন-চারটা লিচু গাছ নেই। মৌসুমী এ লিচু প্রকৃতিতে যেমন সৌন্দর্য বিলায় তেমনি চাষীদের মুখে হাসি ফোটায়। এবারে বাঁশখালীতে লিচুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। সম্প্রতি বাঁশখালীর অভ্যন্তরিণ হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে বছরের সেরা রসালো ফল বাঁশখালীর কালীপুরের লিচু। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় বাঁশখালীতে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে দাবী উপজেলা কৃষি অফিসের। 

মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আসতে শুরু করেছে লিচু। রমজান মাস হওয়ায় ইদ উৎসব শেষে ঘরে ফেরা মানুষ ফিরছে শহরে। শহরের পাইকারেরা এখনও ভিড়েনি বাঁশখালীতে। শুরুতেই লিচুর দাম ভালো না পাওয়ায় হতাশায়য় ভোগছে বাগান মালিকরা।

সরেজমিনে উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে থোকায় থোকায় পাকা লিচু ঝুলছে। উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালিপুর হয়ে বৈলছড়ি পর্যন্ত ৪-৫ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকাজুড়ে সড়কের পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পাহাড় ও লোকালয়ের লিচু বাগানে এখন শুধু লিচু আর লিচু। চলতি বছরে লিচুর বাম্পার ফলনে শুধুমাত্র বাঁশখালীতেই রেকর্ড সংখ্যক লিচু বিক্রির সম্ভাবনা দেখছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক।

বাঁশখালীতে উৎপাদিত লিচু স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে দখল করে নেয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজার। কালিপুরের লিচুর কদর সারাদেশেই। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত যুগ যুগ ধরে। বৈলছড়ি, গুণাগরি, পুকুরিয়া, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল সহ প্রায় প্রত্যেক  ইউনিয়নেই পাহাড়ি এলাকায় একই সাথে সমতলে লিচুর চাষ হয়ে আসছে বহুকাল থেকেই। বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে উৎপাদিত এই লিচুর কদর দেশ জুড়েই। উপজেলার এ লিচু সৌদি আরব, কাতার, ওমান, মালয়েশিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের মতো দেশেও প্যাকেট করে যাচ্ছে। বাঁশখালীর প্রবাসীরা তাদের মালিকের জন্য,  নিজেদের জন্য কালীপুরের রসালো নিয়ে যায়। অনেকেই তাদের প্রবাসী ছেলেদের জন্য এ লিচু পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালীতে এবছর প্রায় ৭৫০ হেক্টর বাগানে স্থানীয় জাতের লিচু উৎপন্ন হয়। এ ছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামে বাঁশখালীর কালিপুরে স্থানীয় জাতের লিচুর পাশাপাশি উন্নত জাতের লিচু যেমন বোম্বাই, চায়না ৩, মোজাফফর চাষ দিন দিন বাড়ছে। আবহাওয়া শুষ্ক ও ভাল থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। বাঁশখালী কালিপুরের লিচু অনেকটা দিনাজপুরের লিচুর মতো হলেও এটি আকারে একটু ছোট। কিন্তু স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। তাই চট্টগ্রামবাসীর কাছে কালীপুরের লিচু বেশ স্বাদের ও প্রিয়।

মৌসুমের একেবারে প্রথম দিকেই বাজারে পাওয়া যায় বলে কালিপুরের লিচুর খ্যাতির রেয়াজটাও কমেনা। এবার লিচু উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান কালিপুরের লিচু চাষী মুহাম্মদ হোবাইব। সপ্তাহ খানেক পরেই আশানুরুপ দাম পাবে বলে ধারণা করছে চাষীরা। বর্তমানে খুচরা বাজারে শত প্রতি লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০, ২৫০, ৩০০ টাকা দরে। হাজারপ্রতি ১২শ লিচু পাইকারী বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭শত থেকে ২ হাজার টাকায়।

বাগান মালিক হুবাইবের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,
'গত বছর আমাদের নিজস্ব বাগানে লিচু চাষ করেছি। এ বছর ১ কানি পরিমাণ লিচু বাগান ১৪ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। বাগানে ৩০ থেকে ৪০ টা গাছ আছে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে, উপযুক্ত দাম পেলে আশা করছি বাগান থেকে লিচু বিক্রি করে ৫০-৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারবো। এখন পাইকারদের কাছে হাজার প্রতি ১৭শ থেকে ১৮শ টাকায় বিক্রি করছি। অল্প কয়দিন পর চড়া দাম পাবো বলে আশা করছি।

লিচুর পাইকারী ক্রেতা জমির উদ্দিন জানান,
'এখনো বাজারে বাণিজ্যিক লিচু আসেনি। বাণিজ্যিক লিচু আসতে অন্তত ১ সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে, শহরের পাইকারের সমাগম এখনো তেমন আসেনাই। ইদের সপ্তাহ পরপরই  পুরোপুরি লিচু বিক্রির ধুম পড়বে বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক প্রতিবেদককে বলেন,
'এবার চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে মৌসুমী ফলের মধ্যে বাঁশখালীর কালীপুরের লিচু স্পেশাল একটি ফল। এখানে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষাবাদ হয়। এ বছর সাড়ে সাড়ে ৭ শত হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে লিচুর উৎপাদন ভালো হয়েছে। স্থানীয় বাজারে লিচু আসতে শুরু করেছে। তবে বাণিজ্যিক লিচু বাজারে আসতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। কালো বৈশখীর প্রভাব না পড়লে, বৃষ্টি না হলে লিচু ব্যবসায়ীরা প্রাকৃতিক সংকট কাটাতে পারবে। এতে বাগান মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।





বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:

banshkhalijanaphad24@gmail.com 


 


কোন মন্তব্য নেই