advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

মুক্তমত "মানবতার ভেল্কিবাজি"

"মরা সবার দুঃখ বুঝি, মূলত কারোরই দুঃখ বুঝি না" আমরা বাঙ্গালিরা সাধারণত আবেগ প্রবণ। যে কোন তুচ্ছ বিষয়ে আবেগে বুক ভাসিয়ে মহাসাগর তৈরী করি। এটা আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য, এ নিয়ে  আবার অহংকারও করি। আর প্রমাণ করতে চাই যে আমরা মূলত দুঃখ বুঝি। বিদ্যালয়ে যখন রাধা-কৃষ্ণের কাহিনী অথবা কোনো দুঃখের কাল্পনিক কাহিনি পড়ান, তখন ভাবি বড় হয়ে কুতুব উদ্দীন আইবেক হবো। যখন নাটকের ট্রাজেডি দেখি, তখন  কান্নায় বুক ভাসাই! এখানেই বাসস্তবতা খুঁজি।
টিভিতে যদি দেখি কোন নিরীহ প্রাণি, হিংস্র প্রাণির খাবার হচ্ছে  তাতেও মনে কষ্ট পাই। এরই মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে চাই যে, আমরা সবার দুঃখ বুঝি। সত্যিই তো! প্রমাণ করতে পেরেছি। যে বলবে প্রমাণ হয় নাই নিশ্চয়! সে দুঃখের অর্থই জানে না। এবার আসুন আসল কথায় যাই। এতক্ষণে সব তো আবেগের কথা বলেছি। এবার একটু বিবেকের কথাই বলি। কম-বেশি সবাই রিকশায় চলা-ফেরা করি কিন্তু কখনো কি রিকশাওয়ালার দুঃখ বুঝেছি? বুঝতে চেষ্টাও কী করেছি? তার সাথে পাঁচ টাকার জন্য ঝগড়া করতেও বিবেকে বাঁধেনি একবারও। অথচ রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে সভ্যতার অনুরোধে শ-পঞ্চাশ বকশিস দিয়ে থাকি। কী আজীব না আমরা।
দেখেছেন ডিসকভারি চ্যানেলে? বনের রাজা সিংহ যখন হরিণ খেতে চায় তখন সবাই মিলে হরিণের পক্ষে থাকি আর স্রষ্টাকে বলি হরিণটি যেন বেঁচে যায় এ মহাবিপদে। আবার কোন মানুষ যদি পুকুর পাড়ের আম গাছের ঐ মৌচাক থেকে মধু আহরণ করতে যায়, তখন মানুষটির জন্য কতই না চিন্তা করি। আর ভাবি যদি মৌমাছি না কামড়ায়! ঐ মধু আহরণ করতে যে কত কষ্ট করতে হয় তারাই ভালো জানে। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। আমাদের দেমাগে আছে  ভালো-মন্দ বুঝার ক্ষমতা। তবুও কি পুকুরের ঐ জালে আটকে পড়া 'মা'মাছটির কথা ভেবেছি? যার পেটে কি না রয়েছে হাজার হাজার বাচ্চা! যদি কোনো নিরীহ মানুষকে অন্যায়ভাবে বন্ধি রাখা হয়, তার জন্য কত চিন্তাই না করি! কিন্তু একবারও কি বারান্দার ঐ খাঁচার ভেতর আটকে থাকা টিয়া-ময়না পাখিটির কথা ভেবেছি? সেও তো স্বাধীনতা চায়, মুক্ত আকাশে আপন মহিমায় উড়াল দিতে। ঘরে পোষা বিদেশি কুকুরটির কত যত্নই না করি! যে কি না খেতে খেতে এতই মোটাসোটা তরতজা হয়েছে, দেখলে যেন মনে হয় কুকুর জগতের রাজপু্ত্র। অথচ বস্তির ঐ সকিনার মা'র কথা একবারও ভেবেছি? যে কিনা নিঃসন্তান হওয়ায় এই বৃদ্ধ বয়সে খাবার পায়না। তাকে দেখলে মনে হয় এ বৃদ্ধ বয়সে সৎমায়ের কাছে লালিত হয়ে বড় হয়েছে। সবার দুঃখ বুঝি তা মিথ্যা নয়, কিন্তু দুঃখ বুঝাটা নাটকে আর বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ রেখেছি।  দুঃখ বুঝাটা কৃত্রিমতায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। সবাই অপরের দোষ দেখি নিজের দোষ কখনোই দেখি না। শুধু তাই নয়, নিজের দোষ খোঁজতেও চাই না, যেন বৃথা শ্রম। আমরা সভ্যতার নোংরা ব্যবহার করছি আর বলতেছি এটাই সভ্যতা! নিজ স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিই তা যতই অপরের স্বার্থ নষ্ট হোক না কেন। এসবে আমরা কী মানবতার অগৌচরে মানবতার ভেল্কিবাজিতে অভ্যস্থ হচ্ছিনা?

                            মিনহাজুল ইসলাম
(অনার্স- ইকোনমিক্স, পটিয়া সরকারী ডিগ্রী কলেজ)




বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com


কোন মন্তব্য নেই