ঝুঁকিপূর্ণ আরবশাহ্ ঘোনা স্লুইসগেইট ও সংলগ্ন বিধ্বস্ত বেড়ীবাঁধ। ছবি-জনপদ |
শিব্বির আহমদ রানাঃ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফেলতির কারণে সংস্কার হচ্ছেনা বাঁশখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী পুঁইছড়ি ইউনিয়নের আরবশাহ্ ঘোনা স্লুইসগেইটটি। ছনুয়া খাল সংলগ্ন পুইছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম পুঁইছড়ির সাথে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার আরবশাহ বাজারের সংযোগ স্লুইসগেইটটি এখন বিকল প্রায়ই। ১৯৮২ সালে নির্মিত আরবশাহ্ ঘোনা নাশি (স্লুইসগেইট) অকেজো হয়ে পড়ায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। স্লুইসগেইট সংযোগ বেড়ীবাঁধটিও ভেঙে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। এ নিয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিম পুইঁছড়ির প্রায় ১৮ হাজার বসতঘর শংকায় পার করছে জীবন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাঁশখালী-পেকুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী পুইঁছড়ি-টৈটং ইউনিয়ন সংযোগ ছড়ায় পানি চলাচলের জন্য যে কালবার্ট (নাশি) আছে তা কয়েক বছর ধরে সংস্কার বিহীন পড়ে থাকায় স্বাভাবিকভাবে পানি চলাচল করতে সক্ষম না হওয়ায় বৃষ্টির মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানিতে দক্ষিণ পুইঁছড়ির ডাকাতিয়া ঘোনা, পন্ডিতকাটা ও সিকদার পাড়ার লোকজন পানি বন্ধি থাকে। এতে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে নেমে আসে স্থবিরতা। ক্ষেতের ফসলি জমি তলিয়ে যায় পানিতে। আরবশাহ্ ঘোনা স্লুইস গেইট দ্রুত সংস্কার করা না হলে বর্ষামৌসুমে তলিয়ে যাবে পূঁইছড়ির পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চল এমনটাই তাদের আশংকা।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আরবশাহ ঘোনা স্লুইস গেইটটি প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়েছে। স্লুইস গেইটের উভয় পাশের বেড়ীবাঁধটি ভাঙতে ভাঙতে প্রায়ই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জোয়ারের স্রোতে যে কোন সময় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার অাশংকা রয়েছে। স্লুইসগেইট ও সংলগ্ন বেড়ীবাঁধ মেরামত করা না হলে পশ্চিম পুঁইছড়ির সাথে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার আরবশাহ্ বাজারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। জোয়ারের পানিতে পুঁইছড়ির নির্মাঞ্চল তলিয়ে যাবে। এতে মাছের ঘোনা, চাষের ফসলি জমি সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
স্থানীয় মু. ইউনুছ, আবু তাহের, বাবুল চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা যায়, স্লুইস গেইট না থাকার কারণে গেল বর্ষামৌসুমে সপ্তাহ জুড়ে টানাবৃষ্টির ফলে পেকুয়া-বাঁশখালীর সীমান্তবর্তী পুঁইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ পুইঁছড়ীর ৩নম্বর ওয়ার্ডের ডাকাতিয়া ঘোনা, পন্ডিতকাটা ও সিকদার পাড়ার প্রায় ২ হাজারের অধিক জনসংখ্যার ৫শতাধিক বসতঘর পানিবন্ধি হয়ে পড়েছিল।
পুইছড়ি ইউনিয়নের স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মু. কামাল জানান, 'সীমান্তবর্তী সংযোগ কালবার্ট হওয়ার কারণে কেউ কালবার্টের সঠিক সংস্কারের এগিয়ে না আসায় জোয়ারের সময় পানি ঢুকে আর পাহাড়ী ঢলে পানি নিঃস্কাশনে বাঁধার ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়। এতে দূর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলার দক্ষিণ পুইছড়ির জনসাধারণকে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পাউবোর কতৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তাদের গাফেলতির কারণে আশার আলো দেখছেনা স্লুইস গেইটটি।'
পুঁইছড়ি এলাকার রোটারিয়ান মুবিনুল হক মুবিন বলেন, 'স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে যাই। স্লুইস গেইট সংলগ্ন বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। যে কোন মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা দেখে আমি নিজের অর্থায়নে বাঁধ নির্মাণে সহায়তা করি। সোমবার শ্রমিক দিয়ে বড় কোন দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে মাটিভরাটের ব্যবস্থা করি।
তিনি আরো বলেন, 'আমি অস্থায়ীভাবে সাপোর্ট দিয়েছি মাত্র। স্লুইসগেইট নির্মাণ ও বাঁধ সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার পাউবোকে অবহিত করলে তারা দ্রুত সংস্কার করবে বলে আশ্বস্থ করেন।'
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা জানিয়েছেন, 'বাঁশখালীর উপকূলীয় পুঁইছড়ি আরবশাহ্ ঘোনা স্লুইসগেইট অকেজো হয়ে পড়া এবং সংলগ্ন বেড়ীবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার বিষয়ে অবগত হয়েছি। তাৎক্ষণিক কোন বরাদ্দ না থাকায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছেনা। স্লুইস গেইট নির্মাণ ও বাঁধ সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।
আপনার মেইল পাঠাতে:
- banshkhalijanaphad24@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন