দেশে যেন নতুন আতঙ্কের নাম রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ। বিষের তীব্রতার দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর সাপ এই চন্দ্রবোড়া। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পদ্মা তীরবর্তী জেলা ও চরাঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে এই সাপটি ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। এমনকি অনেকে আহত এবং নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে জনমানবে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আতংক আর উৎকন্ঠা।
সাম্প্রতিক একটা জরিপে উঠে এসেছে যে, ভারতে প্রতি বছর যে পরিমাণ সর্প দংশনের ঘটনা ঘটে তারমধ্যে অন্তত ৪৩% এবং শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর মোট সর্প দংশনের ঘটনার ৩০-৪০% চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপারের কারণে হয়ে থাকে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অন্যান্য দেশে এই সাপের অ্যান্টিভেনম থাকলেও বাংলাদেশে তার যথাযথ অ্যান্টিভেনম এখন অবধি নেই বললে চলে। থাকলেও তা সব জায়গায় নেই।
এই প্রানঘাতী বিষধর সাপটি আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। একটা সময় দেশ থেকে পুরোপুরি এই প্রাণঘাতি সাপটি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ধারনা করা হচ্ছে, বন্যার সময় ভারত থেকে ভেসে এসেছে এই সাপ। পাশাপাশি একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল ফলানোর কারণেই সাপের বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা খুব দ্রুত এবং সংখ্যায় অনেকগুলো করে বাচ্চা দিতে পারে। ফলে তুলনামূলকভাবে এদের বিস্তার দ্রুত হারে বেড়ে যাচ্ছে।
মূলত, এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রকম শারীরিক উপসর্গ দেখা যায়।
বস্তুতপক্ষে, ঘন ঝোপ আর পরিত্যক্ত জমি অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ায় এই সাপ কৃষি জমিতেই থাকে, যার ফলে যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তারা রাসেল ভাইপারের দংশনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে থাকেন। এছাড়া ধান কাটার এই মৌসুমে কৃষকরা ধান কাটতে যেতে পারছেন না এই সাপের আতংকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাটতে হচ্ছে ধান এবং জমির চাষাবাদের কাজ।
প্রকৃতপক্ষে সাপটি চেনা সহজ কারণ গায়ে ডায়মন্ড শেপের ছোপ থাকে। তবে চিন্তার বিষয় হলো, জায়গা থেকে সহজে এই সাপটি নড়ে না। অথচ অন্য সাপ পায়ের শব্দ পেলে সরে যায়, এরা সরে না। মূলত এ কারণেই খুব সহজেই এই সাপের দংশনের শিকার হতে পারে যে কেউ। তাই এ বিষয়ে সকলের অবগত থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট মহলকে যত দ্রুত সম্ভব সাপটির অ্যান্টিভেনম এর ব্যবস্থা করে আশা জাগানিয়া সৃষ্টি করতে হবে জনমনে।
লিখেছেনঃ তৌহিদ-উল বারী
(শিক্ষার্থী ও কলামিস্ট)
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'রঅনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।
banshkhalijanaphad24@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন