১০ বছর পর ডানের ছড়া লেকে পানি
ইরি-বোরো চাষে ব্যস্থ সময় পার করছে বাঁশখালীর কৃষকেরা
![]() |
বোরো-ইরি চাষে ব্যস্থ দেখা যাচ্ছে কালীপুরে ডলমপীর এলাকার কৃষকদের।
|
শিব্বির আহমদ রানা: বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে কৃষকেরা। কবির ভাষায় "সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা, দেশ-মাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা।" কৃষকরাই আমাদের দেশের প্রাণ। তাদের চেয়ে বড় সাধক আর কেউ নেই। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কঠোর পরিশ্রম করে তারা আমাদের অন্নের যোগান দেয়। তাদের উদ্দেশ্য দেশ ও দশের কল্যাণসাধন। শ্রম, সাধনা, আর ত্যাগ-তিতিক্ষার মহান আদর্শকে ধারণ করে সকলের ঊর্ধ্বে তাদের অবস্থান।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ইরি-বোরো রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। শীতকে উপেক্ষা করে এখন দিন-রাত জমিতে সেচ দেওয়া, জমিতে চাষ দেওয়া, বীজতলা থেকে চারা তোলাসহ বোরো ধান চাষের নানান কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করে বাম্পার ফলনের মধ্য দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবে। এদিকে কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেক কৃষক অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন বলেও জানা গেছে। বিগত ২০০৮ সালের আগষ্টের দিকে বাঁশখালী ইকোপার্কের ডানের ছড়া লেকের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। যার ফলে ইরি-বোরো মৌসুমের সময় উপজেলার শীলকুপ, জলদী, চাম্বল ইউনিয়নের অনেক আবাদি জমি অলস পড়ে থাকে। পূর্বে বামেরছড়া এবং ডানেরছড়ার পানিতে কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হতো ওই অঞ্চলে। সম্প্রতি ইকোপার্কের বাঁধ পুনঃনির্মানের ফলে ডানের ছড়া লেকে দীর্ঘ ১০ বছর পর পানির দেখা মেলে। বর্তমানে বামেরছড়া ও ডানেরছড়া লেকে পানি থাকায় বোরো চাষের পাশাপাশি আগের মতো বারোমাসি সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে-এ ব্যাপারে আশাবাদী ইকোপার্কের কর্মকর্তারা।
![]() |
বোরো-ইরি চাষে ব্যস্থ দেখা যাচ্ছে কালীপুরে ডলমপীর এলাকার কৃষকদের।
|
এদিকে বাঁশখালীর পুইছড়ি, নাপোড়া-শেখেরখীল, গন্ডামারা-বড়ঘোনায় আংশিক, চাম্বল, শিলকুপ, জলদী, সরল, বৈলছড়ি, কাথরিয়া, কালীপুর সহ বাঁশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে ইরি-বোরোধানের চারা রোপনে ব্যস্থ সময় পার করছে চাষীরা। ডানের ছড়া লেকের পানি ব্যবহার করে বিগত সময়ের চেয়ে এবার ব্যাপক পরিসরে বোরোচাষ হচ্ছে বলে জানান কৃষকেরা। বামের ও ডানের ছড়া লেকের পানিতে শিলকুপ, জলদী, চাম্বলে হাজার হাজার একর জমিতে চাষাবাদ হবে এমনটি ধারণা তাদের।
উপজেলার জলদীর এক কৃষক নাছির আহমদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি নিজে ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে সেচের দাম ৫শ টাকা, ধান লাগানো বাবদ মজুরী ২ হাজার, ট্রাক্টরে চাষ দেওয়া বাবদ ১হাজার ৫শ, সার, বিষ, আছে সব মিলে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ হবে। ধানের দাম যদি বাড়ে তাহলে লাভ হবে, অন্যতায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষকেরা। তবে বর্তমানে চারা থেকে শুরু করে ডিজেল ও সারের সংকট না থাকায় বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ ইতোমধ্যেই ব্যপক ভাবে শুরু হয়েছে।
![]() |
বোরো-ইরি চাষে জমি প্রস্তুত করতে চলছে ট্রাক্টরে চাষ, কালীপুরে ডলমপীর এলাকা
|
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান , আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনার পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত ধান-চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়া পর্যন্ত কৃষকদের পাশে থাকবে কৃষি বিভাগ। বামের ছড়া ডানের ছড়া লেকের সহজলভ্য পানির জন্যে এবার বিগত সময়ের তুলনায় জমিতে ব্যাপক বোরো চাষ হবে।
[বাঁশখালী জনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন