বাঁশখালী জনপদ সত্যপ্রকাশে আপোষহীন

বিজ্ঞাপন দিয়ে সাথে থাকুন

test

বাঁশখালীর মাঠে মাঠে শীতের সবজি, সবুজের হাসি চাষীদের মুখে

শিব্বির আহমদ রানা: সবুজ শাকসবজি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ উপজেলা বাঁশখালী। বারো মাসই সবজি উৎপাদিত হয় এ অঞ্চলে। শীতের মৌসুমে মৌসুমী সবজির ব্যাপক ফলন হয় উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। উপযোগী উর্বর মাটি ও সেচ সুবিধার কারণে মাঠ জুড়ে সবুজের হাসিতে হাসে চাষিরা। এখন বাঁশখালীর মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজির ছড়াছড়ি। ফলনও হয়েছে ভাল। বাজারেও উঠতে শুরু করেছে এসব সবজি। সবজিতে বাঁশখালীর স্থানীয় বাজারগুলো সয়লাব হলেও দাম কমছে না জানান চাষীরা।
বাঁশখালীর মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজির বাহারি ফলন। ছবি: শীলকুপ-জলদী ফসলি মাঠের দৃশ্য
সদর উপজেলার চাম্বল, শীলকূপ, জলদী, সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ী, কালীপুর, নাপোড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ নানা প্রকারের শীতকালীন সবজির সমারোহ। এই যেন শীতের সবজিতে সবুজের হাসি।

উপজেলার সর্ববৃহৎ সবজির পাইকারি বাজার ঐতিহ্যবাহী শীলকুপ টাইমবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকারের শীতকালীন সবজিতে ঠাসা বাজার। চারপাশে সবজি আর সবজিতে ভরপুর।ইকোপার্কের বামের ও ডানের ছড়া লেকের পানির সহজলভ্যতার কারণে সবুজ সবজি উৎপাদনে বারো মাসই ব্যস্থ সময় কাটয় চাম্বল, শিলকুপ, জলদীর বেশকিছু ফসলি মাঠের চাষিরা। এজন্যেই এ অঞ্চলকে বলা হয় সবজির রাজ্য।এখানের  চাষিদের একটিই আক্ষেপ, সবজি সংরক্ষণে তাদের কোন হিমাগার নেই।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩ হাজার হেক্টর উঁচুনিচু জমিতে রবি মৌসুমে শীতকালীন শাক সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল ব্যাপক হারে উৎপন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার সিংহভাগ সবজি উৎপাদিত হয় বাঁশখালীতে। তাই বাজারে আসছে প্রচুর তরি-তরকারি। ক্ষুদ্র চাষীদের কাছ থেকে নগরীর ও বিভিন্ন উপজেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জাতের সবজি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে শহরে। উৎপাদিত এই সবজির সিংহভাগ চলে যায় চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে।

উৎপাদিত সবজির মধ্যে রয়েছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, মূলা, গাজর, পালনশাক, লালশাক, সবুজ শাক, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, ধনিয়া, করলা, দেশীয় গোল আলু ইত্যাদি। তবে এ মুহূর্তে মাঠে মাঠে শিম, বেগুন, বাঁধাকপিরই প্রাধান্য।

স্থানীয় চাষী মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ২০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি কেজি ২০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, লাউ/কদু পিচ প্রতি ২০ টাকা করে। চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। সবজির বেশি দাম পেয়ে আমরা চাষিরা খুশি।

চাষী রফিক আহমদ জানান, শিলকুপ এলাকায় পাহাড়ি ছড়ার পানি ব্যবহার করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছি। বিভিন্ন জাতের শাকসবজি উৎপন্ন করে বাজারে বিক্রি করে কাঙ্খিতমানের মুল্য পাচ্ছি। বারো মাসই সময় দিয়ে যাচ্ছি মাঠে। আমাদের প্রতিটি কৃষক পরিবার সবজি চাষাবাদ করে সংসারের ভরণ পোষণ চালিয়ে যাচ্ছে।

বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বাঁশখালীতে প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষকরা আগাম চাষ করে ব্যাপক সবজি উৎপাদন করে। রবি মৌসুমে আলুসহ ২ হাজার ৮শ’ হেক্টর ও ধনিয়া মরিচ, পিয়াজ, রসুন, আদা হলুদ ৩৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে দামও পাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত সবজি চাষ হচ্ছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চাষ হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.