advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

প্রসঙ্গ বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ: এস আলম কর্ণধারকে ঢাবি শিক্ষার্থীর সরল সমীকরণ!

জনাব,
আমাদের বাঁশখালীর এ উপকূলীয় জনপদ আগে ভাঙন কবলিত ছিল। আমরা ভয়ে ছিলাম একটা সময় এ অঞ্চল সমুদ্রবক্ষে বিলীন হয়ে যাবে। উন্নয়ন কাজের মান যাই হোক, এখন সেই ভয় কেটেছে সরকারের হাজার কোটি টাকার বেড়িবাঁধ প্রকল্পের আশীর্বাদে। আপনারা এমন একসময়ে এলাকায় ডুকেছেন যখন এ জনপদটি ভাঙন কবলিত ছিল, কাকতালীয়ভাবে আপনারা আসার পরেই এখানকার বেড়িবাঁধ উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা এলাকায় ডুকেছেন সাবেক বিএনপির এমপি পুত্রের হাত ধরে, এখন সেই এমপিরই ঘোরতর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতাকে গডফাদার বানিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। বিএনপি-আওয়ামীলীগ যাকেই আপনারা লালন করেন না কেন, এদেশে টাকার জোরে মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় ও অবস্থান পরিবর্তিত হয় মুহুর্তেই। উপরের রাজনীতির সব রেকর্ড ভেঙে ইউপি ইলেকশনেরই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতার একত্রে হজ্বে গমন ও হজ্ব সম্পাদনের অনন্য নজির স্বার্থ ও টাকার কাছে এদেশের রাজনীতিবিদদের দেউলিয়াত্বের প্রকাশ করেছে।

"টাকায় সব হয়" বলে একটা কথা আছে। টাকার লোভ যে মানুষকে কতটা নিচুতে নামাতে পারে, তার উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত আপনাদের স্থানীয় গডফাদার লেয়াকত আলী। আমরা তার যৎসামান্যই জানি, পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে আপনিই সব বিষয়ে ভাল জানেন। বড় বড় রাজনীতিবিদ ও শিল্পপতিদের অনেক কৌশল থাকে। আপনারা মাস্তান-গডফাদার দাড় করাবেন গোপনে, ভাব ধরবেন এর কিছুই আপনি জানেন না। অপকৌশলে যারা এগোয়, তারা নিজের গর্তে নিজেই পরে বলেও নীতিকথায় আছে। আপনি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, অস্বীকার করবনা যে আপনার মনে সদিচ্ছা একদম নেই। কিন্তু সব সদিচ্ছা স্থানীয় চোর, দালাল ও মাস্তানেরা খেয়ে পেলে।আপনারা যেখানে ৫০ টাকা দিতে চান সেখানে ৫ টাকায় কাজ সেরে ফেলার বুদ্ধি দেয়। তাদের হাতে একটি সমীকরণ আছে নিজেদের অবস্থান ও স্বার্থকে ঘিরে। আপনাদের হাতে সমীকরণ আছে তাদের, নিজেদের স্বার্থকে ও মানুষকে ঘিরে। কিন্তু সমীকরণের চলকের মান পাল্টালে যে সমীকরণও পাল্টে যায়, সে কথা মনে করিয়ে দিলাম আপনাদের। জনতার শক্তিকে সবাই উপেক্ষা করে, প্রান্তিক মানুষকে কেউই মূল্য দিতে চায় না। ভাববেননা, লেয়াকত আলীর ফাঁদে পরে প্রান্তিক মানুষের সে শক্তি শেষ। প্রান্তিক মানুষের শক্তি অফুরান, তাদের শক্তি যেকোন পরিস্থিতিকে বদলে দিতে পারে তার উদাহরণ আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাসে ভুরিভুরি আছে।

"মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের প্রতি আমার শ্রদ্ধা অপরিসীম। কিন্তু বিএনপির এ দুর্দিনে প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করেও নানাভাবে সমালোচিত একজনকে প্রতিষ্ঠা আমাদের মনে প্রশ্ন জাগায়। এ লেয়াকত ফ্রড আন্দোলন করেছে এবং শেষে কাবুও হয়েছে তা আপনারা ভাল করেই জেনেছেন।  তবুও তার শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতায় মুগ্ধ হয়ে শেষ দাবার ঘুটি হিসাবে তাকে আপনাদের পছন্দ হয়েছে। আপনারা ভেবেছেন, তাকে দিয়ে আপনারা মুখামুখি হওয়া জটিলতাগুলো এড়াতে পারবেন। যেভাবে ইংরেজরা বেচে নিয়েছিল মীরজাফর-মীর মিরণদের আপাৎকালীন বন্ধু হিসাবে। আপনাদের মনেও একটা শেষ ইচ্ছে আছে। আমাদের জাতিগত দূর্ভাগ্য, আমরা ইংরেজদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করলেও নানাক্ষেত্রে বিশেষত ব্যবসায়িক পলিসিকে গ্রহণ করেছি। নৈতিকতার দূর্বলতা হেতু আমাদের মন নীলকরদের ইতিহাস পড়ে তাদের কৃষক-সাধারণদের অত্যাচারের পদ্ধতিকে গ্রহণ করার দিকে এগিয়ে নিয়েছে। আমাদের ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদদের মনে সাধারণ মানুষকে মানুষ হিসাবে শ্রদ্ধাবোধে কিঞ্চিৎ আগ্রহ নেই। নইলে এ প্রকল্প ঘিরে এতো প্রবঞ্চনা হয় কি করে? আপনারা প্রথমে জমি কিনলেন শিপইয়ার্ড, চিনি ও জুতাশিল্প হবে বলে। জমি কেনা হয়ে গেলে বললেন কয়লাবিদ্যুৎ করবেন। এখন মানুষের মাঝে কি হবে তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছেন, কি হবে তা এখনো স্পষ্ট করেননি। অস্পষ্টতা রেখে কাজ এগিয়ে নেওয়ার পলিসি নিয়েছেন, তবে তাই করুন। তবে প্রকল্প রেডি করেও চালু করতে না পারলে, সে দায় আপনাদের মাথায়ই তোলা রইলো।"

সবকিছুর পরে আমি আপনাদের কিছুকথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। অত্যাচারী কখনো চিরস্থায়ী হতে পারেনা। ন্যায্যতা দিয়ে ভাল কিছু করা যে সম্ভব, তা আপনারা আমার চেয়েও ভাল জানেন। তবুও সকলেই কেবল মন্দপথেই এগোতে চায়। সহায় সম্বলহীন মানুষদের যে উচ্ছেদ করছেন, তারা যে উদ্বাস্তু হয়ে এদেশের উদ্বাস্তু সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে সেকথা কি ভেবেছেন? তারা আপনাদের স্বার্থে ভিটেমাটি ছাড়ছে, আর আপনাদের প্রতিষ্ঠা করতে মন শঠ লেয়াকত আলীকে। তাদের প্রতি কি কোনো দায়িত্ব নেই আপনাদের? নাকি ভেবেই রেখেছেন গডফাদার রেখেই সব সারবেন? যদি সে পথে এগোনো সহজ, তাতেই আপনাদের ঝুঁকিটা বেশি থাকছে তা ভাবতে হবে। কেউ ন্যায্য কথা বললে তাকে জেলে পুরেই যদি সব খতম করা যেতো, তবে মানব সভ্যতার এতদূর অগ্রগতি আর হতোনা। জোর করে মানুষকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করছেন, জেলে পুরিয়ে মানুষকে ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন, নামমাত্র টাকা দিয়ে আর কোন দায়িত্ব না নিয়ে ভুমিহীন প্রান্তিক মানুষকে ভিটে ছাড়তে বলছেন; তাদের বঞ্চিত করে সে টাকায় গডফাদার ও চুর-ডাকাতদের তোষণ করছেন। এ পথেই যদি আপনাদের সফলতা তবে এগোননা। দেখা হবে লড়াইয়ে।


ফোরকান উদ্দীন তালুকদার
শিক্ষার্থী- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.co

কোন মন্তব্য নেই