নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরীর বিরোদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরোদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পৌরসভার চার কাউন্সিলর। আনীত অভিযোগের মধ্যে পরিষদের মাসিক সভায় কাউন্সিলরগণের মতামত গ্রহণ না করা, ভূয়া টেন্ডারের ফাইল তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন ওয়ার্ডে উন্নয়নের কোটেশন দেখিয়ে, বিদ্যুৎতের মালামাল ক্রয় সংক্রান্ত কোটেশন দেখিয়ে, বিচারের নামে টাকা আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ প্রদান, টেন্ডারে অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ, মহিলা কর্মচারিদের সাথে অনৈতিক ব্যবহার সহ ১২টি অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য তদন্তে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় পৌর সভা কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল বশিরুল ইসলাম, পৌরসভার সচিব, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারী, এলাকার সুধীজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরীর বিরোদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-১ দেলোয়ার হোছাইন, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবলা কুমার দাশ, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দীলিপ চক্রবর্তী ও ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল কবির সিকদার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, পৌরসভার ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মিয়ার বাজার ইজারার টাকা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে মেয়র আত্মসাৎ।পৌরসভা সদরের সামনে ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি দোকান নির্মাণ করা হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে মেয়রের মনোনীত চার ব্যক্তিকে দোকানগুলো দিয়ে দেওয়া হয়। দোকান প্রতি ৩ লাখ টাকা করে সেলামির নামে নিলেও তা পৌরসভার অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে মেয়র আত্মসাৎ করেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গ্যাস প্রকল্পের (ক্ষতিপূরণ বাবদ) ২২ লাখ ২৭ হাজার টাকা বাঁশখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পায়। ওই টাকা প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী শাখায় জমা করা হয়। পরে মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরী একক স্বাক্ষরে প্রাইম ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। এ ছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে রাস্তার সংস্কার করার জন্য ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীলিপ চক্রবর্তীর নামে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু মেয়র ওই কাউন্সিলরকে না জানিয়ে ওই টাকা তুলতে কাউন্সিলরের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, বাঁশখালী পৌরসভার সৈয়দ শাহ মাজারের পাশে ১শ’ ফুট কাভার ড্রেন তৈরি করা হয়। ১শ’ ফুটের মধ্যে মাওলানা ছিদ্দিক ৭৫ ফুটের খরচ বহন করেন। অপর ২৫ ফুটের খরচ বহন করেন নারায়ণ দাশ নামে এক ব্যক্তি। ওই কাজের খরচ দেখিয়ে চলতি অর্থবছরে ভুয়া কাজের ফাইল দেখিয়ে তিন লাখ ৯৯ হাজার টাকা মেয়র নিজে উত্তোলন করেন। পৌরসভায় কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে ৬৮ জনকে অবৈধ নিয়োগ দেন। নিজের স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতাবলে এসব কর্মচারী নিয়োগে পরিষদের সম্মতি নেয়া হয়নি। অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগে মেয়র প্রতি জনের কাছ থেকে ২-৩ লাখ টাকা করে ঘুষ নেন বলে অভিযোগ করা হয়। একইভাবে ১৬ জনকে স্থায়ী করার কথা বলে জনপ্রতি ৪-৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন মেয়র এমন অভিযোগও তারা দাখিল করেন।
এরই আলোকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি পৌরসভা কার্যালয়ে তদন্তে আসেন এবং শুনানী কার্য অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে জানতে চাইলে তিনি জানান, "এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাতে পারবো। সম্পূর্ন তদন্ত শেষ করতে আরো এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান তিনি।"
শুনানী চালাকালীন সময়ে খোদ মেয়ের উপস্থিত ছিলেন না। শুনানীর দু'দিন আগে (২০ অক্টোবর) মেয়র শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জলদী আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, মেয়র স্ট্রং ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আজবধি ভর্তি আছেন।
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'র অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।
আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন