নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া খদুল্লাহ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরন, পারিবারিক পেশীশক্তির প্রভাব খাটিয়ে স্কুলে অনুপস্থিত থাকা এবং প্রায় সময় স্কুল ফাঁকি দেওয়া সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি (এস.এম.সি) সভাপতি (৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং পাশাপাশি অনুলিপি হিসেবে সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম-১৬, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপ-পরিচালক, মহাপরিচালক, সচিব ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫৭ নং পূর্ব চেচুরিয়া খদুল্লাহপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে প্রায় সাড়ে তিনশ জনের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বিদ্যালয়ের ২ সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে সর্তক করার পরও সর্তক না হওয়ায় স্কুলের মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বিধায় এস.এম.সির সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ও এলাকাবাসীর অনুরোধ বিদ্যালয়টি কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষিত জনবল বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে বানচাল করার লক্ষ্যে সরকার বিরোধী একটি মহলের সাথে সহকারী শিক্ষক আব্দুল মাবুদ ও শামিমা আক্তার হাত মিলিয়ে স্কুলের নিয়মিত পাঠদান কর্মসূচীকে ব্যহত করার পাশাপাশি স্থানীয় পেশিশক্তির প্রভাব খাটিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুল পরিচালনা কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে আসছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে অনুপস্থিত থাকা এবং ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কৃষি কাজে ব্যস্ততা ও স্কুল ছুটির পূর্বেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন, এ ছাড়া ও ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকদের সাথে অসদাচারন, পারিবারিক পেশিশক্তির প্রভাব, বিভিন্ন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে সহকারী শিক্ষিকা শামিমা আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কটুক্তি, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে প্রাক-প্রাথমিক রুমে ঘুমানো, এস.এম.সি কমিটির ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন খারাপ মন্তব্য এবং ছাত্রীদের কে নিজের পরিবারিক কাজের বুয়া হিসেবে ব্যবহার করানো সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক মো.আব্দুল মাবুদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এস.এম.সি কমিটির সাবেক সভাপতির সাথে আমার পরিবারিক দ্বন্দ্ব থাকায় হয়তো তিনি বর্তমান সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে এসব রটাচ্ছেন, সাবেক সভাপতির চাচাত ভাই বর্তমান সভাপতি। বর্তমান সভাপতি একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং ভাল মানুষ। হয়তো কেউ থাকে ভুল বুঝিয়ে এসব করাচ্ছেন। উক্ত কমিটি পূর্বে ও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ,টি,ও স্যার স্কুল পরিদর্শনে আসে। আমি তখন স্যারকে স্পষ্ট ভাষায় বলেছি আমার কারনে যদি স্কুলের কোন সুনাম অক্ষুন্ন হয়, তাহলে আমাকে যেন অন্য কোথায় বদলি করা হয়। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও কৃষি কাজে জড়িতে থাকা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত পক্ষে আমি কোন কৃষি কাজ করিনা। আমাকে বিপাকে ফেলার জন্য স্কুল কমিটির কতিপয় কয়েকজন সদস্য সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে এ অপবাদ রটিয়েছেন।’
অভিযুক্ত অপর সহকারী শিক্ষিকা শামিমা আক্তার বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে আনা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ভালোই বলতে পারবেন।'
এ ব্যাপারে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পানুলাল দত্তের সাথে মুটোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে ও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন