শিব্বির আহমদ রানাঃ বাঁশখালতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিচয়ে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।
গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা ১৭ মিনিটে ০১৭১৫৭৩৩৯৩৫ নাম্বার থেকে ফোন করে নিজেকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদেরকে দোকানের লাইসেন্স, বিআরটিসির অনুমোদন নাই বলে অবৈধভাবে চাঁদা দাবীর অভিযোগ তুলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার শিলকুপ ইউনিয়নের টাইমবাজার 'বাবা মায়ের দোয়া বেকারী'র স্বত্বাধিকারী মো. রেজাউল করিম জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে। কলটি রিসিভ করা মাত্রই অপর প্রান্ত থেকে একজন ব্যক্তি নিজেকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিচয়ে কথা শুরু করে। কথিত ইউএনও উল্লেখিত মোবাইল নম্বর থেকে মুঠোফোনে আমাকে বলেন, 'আমি বাঁশখালীর ইউএনও বলছি। আগামী কাল রোববার আমরা র্যাব, পুলিশ, সাংবাদিক সহ সবাই অভিযানে যাচ্ছি। আপনার দোকানের লিষ্ট আমাদের কাছে আছে। আপনার দোকানের লাইসেন্স, বিআরটিসির লাইসেন্স নাই। আপনি যদি আমাদের বিকাশ/নগদ/রকেটে আজ রাতেই ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন আমরা অাপনার দোকানে অভিযান পরিচালনা করতে যাবোনা। অন্যতায় আপনাকে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা করবো।'
শিলকুপ ইউপির দফাদার আশরাফ আলী জানান, একই নাম্বার থেকে বাঁশখালীর ইউএনও পরিচয় দিয়ে আমাকে মুঠোফোনে বলেন, 'আপনি টাইম বাজার বাবা মায়ের দোয়া বেকারীর মালিককে ফোন করে বলেন আমরা আগামীকাল অভিযান পরিচালনা করতে আসছি।'
কিছুক্ষণ পর কথিত ইউএনও মুঠোফোনের মাধ্যমে টাইমবাজারস্থ 'আমানত বেকারী'র স্বত্বাধিকারী সোহেলকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে বলেন, শিলকুপ টাইমবাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হবে। ভ্রাম্যমান আদালত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইলে ওই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন কথিত ইউএনও।'
ইউএনও`র ভয়ে ওই ২ ব্যবসায়ী টাকার সন্ধানে এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে স্থানীয়দের সাথে কথিত ইউএনও`র চাঁদা দাবির বিষয়টি শেয়ার করলে স্থানীয়রা টাকা না দিতে পরামর্শ দেন। নম্বর দেখে তারা নিশ্চিৎ করে বলেন, ভূয়া ইউএনও পরিচয় দিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তারকে ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে ইউএনওর এম এল এস হারাধন জানান, 'উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার বাঁশখালীতে নেই। তিনি চট্টগ্রামে একটি প্রোগ্রামে আছেন। তাছাড়া গতকালকে কথিত ইউএনওর চাঁদা দাবীর বিষয়টি চৌকিদার আশরাফ পরে আমাকে জানিয়েছিল। এভাবে আরো কয়েকবার ভুয়া পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নম্বর থেকে চাঁদা দাবীর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহীর অফিসার অবগত আছেন।
বাঁশখালী থানা পুলিশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মু. রেজাউল করিম মজুমদার জানান, 'করোনাকে পুঁজি করে অনেকেই এভাবে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এবিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। কতিথ ইউএনওর সঠিক তথ্যানুসন্ধানে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, 'প্রতারকরা নানা কৌশলে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। আমাদের সকলকে সতর্ক হওয়া উচিৎ।'
নোটঃ 01715733935 (uno পরিচয়ে ফোন করে ব্যবসায়ীকে)
01713166621 (Uno পরিচয় দিয়ে স্থানীয় দফাদারকে ফোন করে)
01910541939 (কথিত ইউএনওর নগদ একাউন্ট)
01725466607 (স্যানেটারি পরিচয়ে ফোন করে)
- banshkhalijanaphad24@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন