![]() |
সরল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে জেনারেটর বসিয়ে পানি উত্তোলন, ভীড় জমেছে সহস্র লোকের |
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে বিদ্যুতের লাইন। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে গাছের ডালপালা পড়ায় বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিল পুরো বাঁশখালী। পল্লীবিদ্যুতের বিশেষ টিম শত চেষ্টা করেও পুরো বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে সক্ষম হয়নি। কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসলেও ঘন্টায় ১৫ থেকে ২০ বারের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট অনেক গ্রাহক।
চলছে পবিত্র রমজানের মাস। বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সেহরী ও ইফতারের সময় বেশ ভোগান্তিতে পড়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। মাদরাসা-মসজিদগুলোতে ইবাদত-বন্দেগীতেও প্রতিকূলতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির জন্য চরম হাহাকারে পড়েছে সহস্রাধিক জনসাধারণ।
সরে জমিনে দেখা যায়, বাঁশখালীর সরল, গন্ডামারা, শেখেরখীল, চাম্বল, শিলকূপ, বাহারছড়া, পুইছড়ি, ছনুয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চলে জেনারেটর বসিয়ে মোটর থেকে পানি উত্তোলন করে সুপেয় পানির চাহিদা মেঠাচ্ছে এলাকার লোকজন। এতে পানির জন্য ভিড় জমাচ্ছে অনেকে। তাদের অভিযোগ, প্রায় ৪০ ঘন্টা অতিক্রম হলেও এখনো বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের দেখা নেই।
চাম্বল থেকে মিশকাতুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাতে চাম্বলের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকেনি। চাম্বলের ধুইল্যাজিরি, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আজানি পাড়া ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ আসেই।
গন্ডামারা আল-কোরআন মডেল একাডেমী ও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন জানান, কালবৈশাখীর প্রভাবে বিদ্যুৎহীন ছিল আমাদের পুরো গন্ডামারা এলাকা। সন্ধ্যায় বিদ্যুতের লাইন চালু হলেও ঘনঘন লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে। এতে চরম পানীয় জলের সংকটে পড়ছে এলাকার লোকজন।
সরল ইউনিয়ের বাসিন্দা বায়তুল ইরফান আদর্শ মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক মো. কামাল উদ্দীন জানান, এখনো পর্যন্ত সরলের ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বিদ্যুতের দেখা নেই। মোটরচালিত বৈদ্যুতিক শ্যালোতে নির্ভরশীল এলাকার লোকজন পানীর জন্য হাহাকার করছে। অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে জেনারেটর বসিয়ে পানি উত্তোলন করছে।
সরল ইউনিয়নের উত্তর সরল নতুন বাজার সংলগ্ন সৌদি প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ির উঠানে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। এ সময় পানির জন্য সরলের তিন ওয়ার্ডের সহস্রাধিক মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো ছিল।
সরলের পাইরাং থেকে রুজি আক্তার বলেন, গতকাল থেকে আমরা বিদ্যুতের দেখা পাইনি। খাবার পানি সংকটে আছি। অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে। কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সচল হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ওই গৃহবধূ।
শিলকূপ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসীন্ধা বাবু প্রকাশ বড়ুয়া বলেন, কালবৈশাখীর প্রভাবে বাঁশখালীর অনেক এলাকায় এখনো পর্যন্ত বিদ্যুতের লাইন সচল হয়নি। এ জন্যে তিনি বাঁশখালী পল্লীবিদ্যুতের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেন।
বাঁশখালী পল্লীবিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ঋষি কুমার ঘোষ বলেন, ‘কালবৈশাখীর প্রভাবে আমাদের বৈদ্যুতিক লাইনে গাছের ডালপালা পড়ে, খুঁটিসহ ট্রান্সফরমার মাটিতে পড়ে প্রায় জায়গায় লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। ঘটনার পরপরই আমাদের বিশেষ টিম রাত-দিন নিরলসভাবে সংযোগ চালু করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছি না। আশা করছি খুব শীঘ্রই পুরো বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে সক্ষম হব। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'রঅনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন