advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

কমেছে দর্শকের আনাগোনা, মৃত্যুফাঁদে ঝুলে আছে বাঁশখালী ইকোপার্কের ঝুলন্ত সেতু -বাঁশখালীজনপদ২৪.কম


ক্ষিণ চট্টগ্রামের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমন্বয় বাঁশখালী ইকো-পার্কের ঝুলন্ত সেতুটি এখন মরণফাঁদ। সু-উচ্চ পাহাড়, মনজুড়ানো সবুজের ছায়াঘেরা গাছগাছালি, সন্ধ্যায় বন্যপ্রাণীর হাকডাক, বামের ও ডানের ছড়া লেকের স্বচ্ছ জলরাশি, সু-উচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ সব মিলিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভয়ারণ্য বাঁশখালী ইকো-পার্ক। এখানে পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো রয়েছে অজস্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণ। বিকেলের গোধূলিতে লেকের সৌন্দর্যে মন ভরে যায়। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির বিচরণ পার্কটিকে করেছে আরও রোমাঞ্চকর।

পড়ন্ত বিকেলে বিশ্রামের জন্য রয়েছে স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম ছাতা। দিনভর ঘুরে বেড়ানোর মতো রয়েছে বিস্তৃতি পাহাড়ি জায়গা। নির্দিষ্ট দূরত্বে রয়েছে বিশ্রামের জন্য ব্যবস্থা। প্রিয়জনদের নিয়ে প্রিয় মুহূর্তগুলো কাটানোর এক অন্যতম বিনোদন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্ক।

ইদ আনন্দে, পূজা-পার্বনে, সরকারি দীর্ঘ ছুটির দিনে, সপ্তাহের শুক্রবারে দেশর ভিবিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ করতে আসে ভ্রমণ বিলাসী লোকজন। এমনিতেই নিত্যদিন দর্শকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে পার্কটি। বিগত ২০০৮ সালের টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বাঁশখালী ইকো-পার্কের বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে বামের ছড়া লেক জলশূন্য হয়ে পড়ে, হারিয়ে যায় সোন্দর্য্যের বিরল দৃশ্য। ইকোপার্কে বাঁধ নির্মাণ করা হলেও পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের মতো কোন কাজ দৃশ্যমান হয়নি আজবধি। চিরচেনা সৌন্দর্য এখন স্বপ্নের মতোই। জীর্ণশীর্ণ পড়ে আছে জীবজন্তু রাখার খাঁচাগুলো। ঝুঁকির কবলে আছে সু-উচ্চ টাওয়ার গুলো। দু'পথ মাড়িয়ে হেঁটে চলার দীর্ঘ দূরত্বের সিঁড়িগুলোও ভেঙ্গে গিয়েছে। আসন্ন বর্ষায় হয়তো বিলীনের অপেক্ষায় সিঁড়িপথগুলো। পর্যটক আসে। নিয়মিত স্থানীয় ও বাহিরের অন্যান্য স্থান থেকে আসা পর্যটকরা পার্কে এসেই জীর্ণশীর্ণ অবস্থা দেখে হতাশ হয়ে ফিরছে। ধীরে ধীরে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে বাঁশখালী ইকোপার্ক।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুর বেহাল দশাটি। কয়েকটি গাছের পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে লোহার এ্যাংগেল থেকে। পাটাতন সংযুক্ত এ্যংগেলে ধরেছে মরিচা। বেশকিছু এ্যাংগেল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পর্যটকের জীবন ঝুঁকির ও মরণ ফাঁদের আরেক নাম যেন বাঁশখালী ইকো-পার্কের ওই ঝুলন্ত সেতুটি। যেখানে ১০ জনের অধিক লোকের সেতু পারাপারের নিষেধ করা হয়েছে সেখানে ৪-৫ জনের জন্যেও বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেতুটি।

কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু মেরামতে নেই নজরদারী। দর্শকের আনাগোনা আগের চেয়ে কম হলেও ঝুঁকিপূর্ণ ঝুলন্ত সেতুটির প্রধান ফটকে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লেখা আছে ১০ জনের অধিক যাত্রী উঠা নিষেধ। এর পরেও অধিক যাত্রী সেতুতে ভর করে। ভয়ে থাকে দর্শকরা।

আনোয়ারা থেকে আসা পর্যটক মোরশেদ হাসান বলেন, বাঁশখালী ইকো-পার্কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কথা জেনেছি নানা প্রমাণ্য চিত্র ও খবরের কাগজে। কিন্তু এসে দেখি বর্ণিত সে সৌন্দর্য্য এখন আর নেই। এখানে বন্যপ্রাণীর খাঁচা আছে, নেই প্রাণিজগৎ। খাঁচাগুলো পড়ে আছে পরিত্যাক্ত অবস্থায়। এখানেই সৌন্দর্য্য বিলীন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি কৃত্রিম সৌন্দর্য্যের সমন্বয় থাকলে পার্কটি আরও নান্দনিক হয়ে উঠতো। ডানের ছড়ার লেকের স্বচ্ছ পানি দৃশ্যমান হলেও বামের ছড়ায় ছেয়ে গেছে টোপাপানায়। ঝোপঝাড়ে ভুতুড়ে পরিবেশের রূপ নিয়েছে স্বচ্ছ লেকটিও। ঝুঁকিপূর্ণ ঝুলন্ত সেতুটি সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার ঘটে যেতে পারে বলে জানান ওই দর্শনার্থী।

জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বাঁশখালী ইকো-পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুজ্জমান শেখ জানান, ঝুলন্ত সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তবে, এর সংস্কারে কোনো বাজেট নেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাটাতনগুলো মেরামত করা হবে।





বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই