শিব্বির আহমদঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাথে গন্ডামারা ইউনিয়নের লোকজনের যোগাযোগের জন্য ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয় বেইলি ব্রিজ। পরে ব্রিজটি অকেজো হয়ে গেলে বিকল্প হিসেবে ২০০৮ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী গন্ডামারা বাজার সেতু নামে ওই এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে উপকূলের সাথে পূর্বাঞ্চলের জনগণের যোগাযোগ রক্ষার্থে পাকা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
এ দিকে পাকা ব্রিজটি নির্মিত হওয়ার পর অলস হয়ে পড়ে পুরানো বেইলি ব্রিজটি। অবহেলায় অযত্নে ধীরে ধীরে ব্রিজের পাটাতন গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ বেইলি ব্রিজটি। বিকল্প হিসেবে আরসিসি ব্রিজ চালু হওয়ার পর ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ার কয়েক বছর গত হলেও কোটি টাকা মূল্যের এসব সরকারি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ অথবা সরিয়ে নেয়া হয়নি এখনো।
এ ব্রিজের ভাঙা অংশ চুরি হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। বাঁশখালীর গন্ডামারা জলকদর খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি যে কোনো সময় ভেঙে গিয়ে বন্ধ হতে পারে অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ। দেশজুড়ে পরিত্যক্ত বেইলি ব্রিজ অকশনে বিক্রির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সরকার সারা দেশে রাস্তাঘাট ও সেতু নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করছে। বিশেষ করে সেতু বিভাগের অধীনে দেশের সড়ক যোগাযোগকে আরও মসৃণ ও গতিশীল করতে বিভিন্ন নদী, নালা, খালের ওপর দিয়ে সেতু, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আর এসব কালভার্ট নির্মাণের পর অনেক স্থানেই পুরনো বেইলি ব্রিজগুলো অকেজো হয়ে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে।
ব্রিজগুলোর কোনো সংস্কার যেমন হয় না, তেমনি বিক্রি করে অন্য কাজেও লাগানো হচ্ছে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পড়ে থাকা বেইলি ব্রিজগুলোকে অকশনের মাধ্যমে বিক্রির জন্য সরকারের নির্দেশনা থাকলেও গন্ডামারা বেইলি ব্রিজের মালামাল রক্ষায় কর্তৃপক্ষের রয়েছে উদাসীনতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন খ্যাত গন্ডমারার আশরাফ আলী সড়ক সংলগ্ন এ বেইলি ব্রিজটি জরাজীর্ণ হয়ে দীর্ঘ বছর ধরে পড়ে থাকায় ব্রিজটির পাটাতনগুলো নিয়ে যাচ্ছে এলাকার কতিপয় দুর্বৃত্তরা।
ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবত লবণাক্ত পানিতে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থেকে ক্ষয়ে-মরিচা ধরে ঝরে যাচ্ছে কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ খালের দু’পাশে অলস দাঁড়িয়ে থাকা বেইলি ব্রিজের অংশবিশেষ ও মালামাল। রাতের আঁধারে লোক চক্ষুর অন্তরালে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে অলস ব্রিজের পাটাতনগুলো। ব্রিজের পূর্ব-পশ্চিম প্রান্তের কয়েকটি পাটাতন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, দুর্বৃত্তরা রাতে ও দিনে প্রকাশ্যে নিয়ে যাচ্ছে ব্রিজের যন্ত্রাংশ সমূহ। তারা বলেন, এই ব্রিজের যন্ত্রাংশগুলো সরকারি ভাবে টেন্ডার আহবান করে অকশনে বিক্রি করে দিলে সরকার অনেক রাজস্ব পেত। এইসব দেখার যেন কেউ নাই।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম দোহাজারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহের সাথে মুঠোফোনে বাবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ দৈনিক অধিকারকে বলেন, গন্ডামারা বেইলি ব্রিজের বিষয়ে অবগত আছি। ইতোমধ্যে অকশনে বিক্রির কাজ চলছে। খুব শিগগির অকেজো ব্রিজটি সরিয়ে নেওয়া হবে।
banshkhalijanaphad24@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন