advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

সীতাকুন্ড ট্র্যাজেডি ও বাঁশখালীর সন্তান একজন মানবিক ডাক্তার আব্দুর রহিমের গল্প _বাঁশখালীজনপদ২৪.কম


জনপদ প্রতিবেদকঃ
 চট্টগ্রামে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫০ জন মানুষ মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৪৫০ জনের বেশি। 

ভয়াবহ ঘটনাটির পর রাত থেকে রোগীর স্বজন, চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী এবং প্রশাসন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছুটে চলছিল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী এবং স্বজনদের চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। 

চমেকের পৃথক তিনটি ওয়ার্ডে অর্ধশতেরও বেশি কনসালটেন্ট, চিকিংসক ও ইন্টার্ন টিম অক্লান্ত পরিশ্রম করে এখন পর্যন্ত আহতদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। 

অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় যারা নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের সহকারি রেজিস্ট্রার ডা. মো. আবদুর রহিম। 

তিনি জানান, আমি সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এখনও সার্জারি বিভাগে কোনো রোগী মারা যায়নি। অনেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। যাদের বড় অপারেশন হয়েছে তারাও শিগগির সেরে উঠবেন। 

চিকিৎসক আব্দুর রহিম বলেন, সীতাকুণ্ডের ট্র্যাজেডির ঘটনায় চমেকে বার্ন প্লাস্টিক, সার্জারি, অর্থোপ্রেডিকস- এ তিন বিভাগে পৃথকভাবে চিকিৎসা চলছে। যে সমস্ত রোগীর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেছে তাদের চিকিৎসা চলছে আমার সার্জারি বিভাগে। আজ ১৫ থেকে ২০ জন রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে রিলিজ করে দিয়েছি। আরও ২০ জনের মতো রোগী সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা আমার তত্বাবধানে আছেন। আমি এবং আমার জুনিয়ররা বিরতিহীনভাবে তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের বিশ্রাম নেই। পুরো টিম অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ভালো লাগছে এজন্য, এখনও আমার বিভাগে কোনো রোগী মারা যায়নি। এখানে অনেক রোগীর বড় অপারেশন হয়েছে। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. রেজাউল করিম শ্রাবণ বলেন, তখন রাত সাড়ে ১২টা কিংবা ১টা হবে। সার্জারি বিভাগের ইউনিট-১ এ আমার এডমিশন নাইট ছিল। ভেবেছিলাম আজ বোধ হয় রোগী কম আসবে। একটু রিলাক্স থাকবো। কিন্তু হঠাৎ করেই মাত্র ৫ মিটের মধ্যে ৬-৭ জন রোগী চলে আসলো। সবাইকে সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে আনা হয়েছে। জানতে পারলাম কেমিক্যাল ডিপো বিস্ফোরণ এবং মাস ক্যাজুয়াল্টি। 

তিনি বলেন, মাস ক্যাজুয়াল্টি ব্যাপারটা আমি সিরিজে দেখেছিলাম, কিন্তু ইন্টার্ন ডাক্তার হিসেবে নিজ চোখে দেখতে পারবো তা ভাবিনি। সব রোগীদেরই অবস্থা ছিলো মারাত্মক খারাপ। একটা রোগী তার নিজের হাতে পেট থেকে বের হওয়া নাড়িভুঁড়ি ধরে ওয়ার্ডে চলে এসেছিল। রোগীটি কিন্তু সজ্ঞানে ছিলো। কতটা বিভৎস ছিলো দৃশ্যটি! আরেকজন রোগীর বুকে বড় একটি লোহার পাত ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে ছিল। এমনই ভয়ঙ্কর ও বিভৎস ছিল গত রাত। 

এই ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. আব্দুর রহিমের ভূমিকার বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, সেই সময় তাৎক্ষণিকভাবে সকল সিনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স, স্টাফ এবং ১ম থেকে ৫ম বর্ষের সকল শিক্ষার্থী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো দ্রুত ঝাপিয়ে পড়েন। সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা অনেক দ্রুতই রোগীদের সেটেল্ড করতে সক্ষম হই। আর এসময় আমাদের সার্জিক্যাল টিমের কাপ্তান ছিলেন ডা. আব্দুর রহিম স্যার। স্যারের পরামর্শে আমরা সকল কাজে সফল হই। 

উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। একটু পর বিস্ফোরণ হলে কনটেইনার ডিপোর আশপাশের ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক কম্পনের সৃষ্টি হয়। এ সময় মসজিদ ও আশপাশের শতাধিক ঘরবাড়ির জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। কনটেইনারে রাসায়নিক দ্রব্য থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় অর্ধশত এবং গুরুত্বর আহত প্রায় ৪৫০ জনের বেশি। 




বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই