advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

ইসলামী ব্যাংকের ক্ষুদ্র বিনিয়োগ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান

বাংলাদেশে শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত প্রায় আটটি ব্যাংক রয়েছে। তন্মধ্যে শরিয়া মোতাবেক ব্যাংকিং ধারার প্রবর্তক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পি এল সি।আইডিবির অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৮৩ সালে  ইসলামী ব্যাংকিং  ধারার সূচনা হয়। ব্যাংকিং ধারা মূলত দুইভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। 

১.সুদভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক 

২.মুনাফাভিত্তিক পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক

ইসলামী অর্থনীতি লাভ লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ব্যবসা পরিচালনায় লোকসান হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ইসলামী ব্যাংকিং মূলত ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাতে দুইটি পক্ষ থাকে ক্রেতা ও  বিক্রেতা। এক পক্ষ মূলধন সরবরাহ করে অপরপক্ষ মেধাশ্রম  ব্যায়ে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। লোকসান হলে উভয় পক্ষকে লোকসান বহন করতে হয়।মূলধন  সরবরাহকারীর আর্থিক লোকসান হয় ব্যবসা পরিচালনাকারীর মেধা শ্রম ও সময়ের লোকসান হয়ে  থাকে। চুক্তিতে  যেভাবে পরিচালিত হওয়ার কথা সেভাবেই লাভ বন্টিত হয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক মূলত দুইভাবে আমানত সংগ্রহ করে থাকে।

১.মোদারাবা পদ্ধতি বা একপক্ষ  মূলধন সরবরাহ  করে।  যে পক্ষকে বলা হয় সাহেবাবাল মাল অপরপক্ষ মেধাশ্রম ব্যয়ে ব্যবসা  পরিচালনা করে থাকেন, তাকে বলা হয় মুদারিব। 

২.আল ওয়াদিয়া পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে গ্রাহক বা মূলধন সরবরাহকারী লাভের  অংশ প্রাপ্য হবে না লোকসানও  বহন করবে না  কিন্তু যখনই তিনি মূলধন ফেরত চাইবেন তখনই দিতে বাধ্য থাকিবে। ব্যাংকের বর্তমান মূলধন প্রায় এক লক্ষ ৫২ হাজার কোটি কোটি টাকা। তাছাড়া ইসলামী ব্যাংক রেমিটেন্সির সিংহভাগই আহরণ করে থাকে। 

ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ  পদ্ধতি পরিচালিতই হয়ে থাকে ক্রয় বিক্রয় এর মাধ্যমে। 

তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বায়ে মোয়াজ্জল মুরাবাহ মশারাকা এইচপিএসএম পদ্ধতি। 

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অভাব অনটন ও দুর্দশা মোচনে ইসলামী ব্যাংকের  ক্ষুদ্র বিনিয়োগ পদ্ধতি সুপ্রসিদ্ধ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করার  লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প চালু করেন। যেই প্রকল্পের মাধ্যমেই দুস্থ ও বিধবা পুঁজিহীন সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী করতে ইসলামী ব্যাংকের ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে প্রায়  ১৮০০০ গ্রাম অন্তর্ভুক্ত। সুবিধা ভোগীর সংখ্যাও কম নয়।ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প কৃষি খাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায় শ্রমজীবী সহ গ্রামীণ  গৃহায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে  সুবিধা প্রদান করে আসছে। সুবিধাভোগীদের অধিকাংশই নারী। বর্তমানে  নারীর ক্ষমতায়নের বিকল্প নাই। এরই ধারাবাহিকতায় ইসলামী  ব্যাংক  নারী উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হয়ে দেশের সুবিধা বঞ্চিত অনেক নারীকেই সমাজের উচ্চ স্থানে সমাসীন করছেন। সৃষ্টি করছেন হাজার হাজার নারী উদ্যোক্তা। ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প জিডিপি বৃদ্ধিতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রকল্পে ঋষিখাত শিল্পোন্নয়ন  ক্ষুদ্র ব্যবসা ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর গৃহনির্মাণে ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রকল্পটি গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে পরিচালিত হলেও সম্পূর্ণ ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত হয়ে আসছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মধ্যে সর্বপ্রথম  ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে।যা  মাসিক ও সাপ্তাহিক  কিস্তির ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে মাত্র ৫ হাজার টাকা  বিনিয়োগ নিয়ে শুরু করা উদ্যোক্তা এখন কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ীর তকমা লাভ করছে। ইসলামী ব্যাংকের এ  প্রকল্প পরিচালিত হয়ে আসছে গ্রামে   পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প শহরে নগর  দরিদ্র উন্নয়ন প্রকল্প নামে।  এর ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ। প্রকল্পের মাধ্যমে অনেকগুলো কল্যাণমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তন্মধ্যেই নবজাতক উপহার বিবাহ উপহার শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করজে হাসনা চিকিৎসা ক্যাম্প সদস্যকে মৃত্যুকালীন সৎকার করার  খরচ ও আননুর নামে  প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন উল্লেখযোগ্য। এভাবে যদি ইসলামী ব্যাংকের মতো প্রতিটি ব্যাংক  ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রকল্প স্থাপন করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আত্মনির্ভরশীল করার প্রয়াস পায় তাহলে অদূর  ভবিষ্যতে  দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে না বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

-লেখক: কবি ও কলামিষ্ট

জসীম উদ্দিন মনছুরি





বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:

banshkhalijanaphad24@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই