advertisment

advertisment
বিজ্ঞাপন দিন

ব্রেকিং নিউজ

বাঁশখালীতে প্রতিবন্ধী ৩ সন্তান নিয়ে দিনমজুরের দুর্বিষহ জীবনযাপন “বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'‘


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
 চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় প্রতিবন্ধী তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দিনমজুর আলমগীর কবির।

জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের খুদুকখালী ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার হাজ্বী কালামিয়া পাড়ার আলমগীর কবির ১৫ বছর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের ঘরে ৪ সন্তানের জন্ম হয়। এরমধ্যে ২ ছেলে বখতিয়ার (১৩) ও আব্দুল্লাহ (৪) এবং তৃতীয় সন্তান রাশেদা আক্তার (৬) শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের মধ্যে কেউ উঠে দাঁড়াতে পাড়ে না।

একই পরিবারের তিনটি শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম নেওয়ায় সমাজে তারা অন্যান্য ছেলে-মেয়ের মতো চলতে পারে না, কথাও বলতে পারে না, মিশতেও পারে না। সবসময় বাড়িতে থেকে সময় কাটাতে হয় তাদের।

এ দিকে, সংসারের পাঁচজনের মুখে অন্ন তুলে দিতে অসহায় বাবাকে অসুস্থ শরীর নিয়েই কাজ করতে হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রির দিনমজুরের কাজ করে পরিবারে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত দেওয়াও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিবন্ধীর বাবা আলমগীর কবিরের। মাথা গোঁজার মতো বসতঘরটিও নেই তাদের।

আলমগীর কবির চন্দনাইশ উপজেলা থেকে ১৫ বছর আগে খোরশিদা আক্তারকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। পরে চন্দনাইশের রওশনহাট বিজিসি ট্রাস্টের পাশে স্থানীয় এক লোকের পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকতেন তারা। কয়েক বছরের ব্যবধানে তাদের সে বাড়িটিও ছাড়তে হয়। এরপর পরিবারসহ আলমগীর কবির চলে আসেন নিজের এলাকা বাঁশখালীর ছনুয়ায়। সেখানে তারা ৭ ভাই মিলে বাবার বাড়িতে কোনোরকম বসবাস করেন।

এ দিকে, তাদের বাবার সহায়-সম্বলও নেই। সামান্য বসতভিটেতেই মানবেতর জীবনযাপন করেন তারা। তার ওপর আলমগীরের পরিবার যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

ফলে বাবার বাড়ির একটি বারান্দায় ছোট্ট জায়গা নিয়ে থাকে আলমগীরের পরিবার। এ বাড়িতেই স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ সন্তানের মধ্যে তিন প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে বসবাস করেন তিনি। একই পরিবারের তিনজন প্রতিবন্ধী সন্তান থাকার পরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসচেতনতার কারণে দীর্ঘদিনেও সরকার থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধাও পায়নি তারা।

প্রতিবন্ধীদের মা খোরশিদা আক্তার জানান, একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে খুব কষ্ট করতে হয়। তারা কথা বলতে পারে না, তাদের প্রয়োজনের বিষয়ে আমি ছাড়া কেউ বুঝে না। কিন্তু পরপর তিনটি প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগেছি। তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

অন্যদিকে, আলমগীর কবির বলেন, সন্তানেরা প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদের সাথে কেউ মিশতে চায় না। আর বাড়ির বাইরে তো, যেতেও পারে না। প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্ম নিলেও প্রতিটি সন্তানকেই বাবার মমতা দিয়ে ভালোবাসি। নিজের শারীরিক কর্মক্ষমতাও নেই। নিজেও প্রায় সময় অসুস্থ থাকি।

তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিনা সুদে কোনো ব্যাংক সহায়তা করলে প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে কোনো একটি দোকান দিয়ে বাকিটা জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারতাম।’

এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাকিবুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের সমাজে বোঝা নয়, সম্পদ হিসেবে দেখার কারণে অনেক প্রতিবন্ধী পরিবার সরকারি প্রতিবন্ধী সুবিধা পাচ্ছে। ছনুয়া ইউনিয়নের আলমগীরের প্রতিবন্ধী পরিবারটি এখনো আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। প্রতি বুধবার সকালে আমাদের অফিসে প্রতিবন্ধী টিম প্রতিবন্ধী জরিপ করে থাকেন। যে কোনো বুধবার তারা এসে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কাজ করব।

তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনকে সম্পৃক্ত করে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে থেকে যারা অধিক অক্ষম তাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে সুবিধাভোগী তালিকা প্রস্তুত করা হয়। তবে একই পরিবারে তিনজন প্রতিবন্ধী থাকার বিষয়টি জানা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে আগামীতে বিবেচনা করা হবে বলে আশা করছি।



বাঁশখালীজনপদ২৪.কম'অনলাইনে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র,  রেখাচিত্র,  ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। যদি কপি করতে হয় তাহলে অনুমতি নিতে হবে অথবা কন্টেন্টের নিচে ক্রেডিট দিয়ে দিতে হবে।

বাঁশখালীজনপদ২৪.কম' বাঁশখালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সম্পদ-সম্ভার, প্রথা-প্রতিষ্ঠান ও স্থাপত্যশিল্প নিয়ে শেকড় থেকে শিকড়ের অনুসন্ধানে সবসময় সচেতন। বাঁশখালীকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। তাই, আমাদের সাথে থাকুন। সব খবর সবসময় সবার আগে পেতে ফেইসবুক পেইজ-এ লাইক দিন।

আপনার মেইল পাঠাতে:
banshkhalijanaphad24@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই